জানাজার নামাজ হল একটি মুসলিম সামাজিক আদর্শ যা মৃত ব্যক্তির পরিবার এবং সামাজিক বন্ধুদের উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করার একটি উপায়। জানাজার নামাজ মৃত ব্যক্তির পরে সমস্ত শারীরিক অবস্থান থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করতে হয়। জানাজার নামাজ বিশেষভাবে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে প্রচলিত একটি আদর্শ।
জানাজার নামাজে সামাজিক ও ধর্মীয় দুইটি ব্যাপার সমন্বিত হয়। এটি মৃত ব্যক্তির জন্য একটি প্রার্থনা ও আল্লাহর পক্ষে দুআ করার একটি উপায়। জানাজার নামাজে মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান অনুসরণ করা হয়। এটি একটি সম্মান যা মৃত ব্যক্তির জন্য দেওয়া হয় এবং এটি জীবিত ব্যক্তির মন্দির পরিবার এবং সামাজিক বন্ধুদের উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করার জন্য একটি সুযোগ
জানাযার নামাযের কিছু মাসায়েল
ইমাম সাহেব তাকবীরে কম/বেশি করলে
জানাযার নামাযের ইমাম সাহেব যদি ভুলবশত দুই তাকবীর বলে সালাম ফিরিয়ে দেন, তাহলে আবার দুই তাকবীর বলে সালাম ফিরাবেন। এইরূপ তিন তাকবীর বলে সালাম ফিরালে পুনরায় এক তাকবীর বলে সালাম ফিরাবেন। ইমাম সাহেব ভুলে পাঁচ তাকবীর বললে মুক্তাদিগণ চার তাকবীর পর্যন্ত বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবে; ইমামের সাথে পঞ্চম তাকবীর বলবে না। এরপর ইমাম সাহেব সালাম ফিরালে তার সঙ্গে একত্রেই সালাম ফিরাবে; আগে সালাম ফিরাবে না। এ কারণে জানাযা দ্বিতীয় বার পড়তে হবে না। নামায হয়ে যাবে। [রদ্দুল মুহতার: ২/২১৪; আল বাহরুর রায়েক:২/২২৩; মাহমুদিয়া:৮/৫৫৪-৫৫৫]
জানাযার নামাযে মাসবূক হলে
কোনো লোক জানাযার নামাযে মাসবুক হলে অর্থাৎ ইমাম সাহেব কয়েকটি তাকবীর বলার পর এসে শরীক হলে, সে তাকবীরে তাহরীমা না বলে কিছু সময় চুপ করে দাড়িয়ে থেকে যখন ইমাম পরবর্তী তাকবীর বলবে, তখন তার সাথে তাকবীর বলে নামাযে শরীক হয়ে যাবে। এটিই তার জন্য তাকবীরে তাহরীমা হবে। এরপর যথা নিয়মে ইমামের সাথে নামায আদায় করতে থাকবে। তারপর সালামের পর লাশ উঠানোর আগেই যে তাকবীরগুলো ছুটে গেছে সেগুলো যথা সম্ভব তাড়াতাড়ি আদায় করে নিবে। এই তাকবীরগুলো আদায়কালে লাশ উঠানোর আগে সম্ভব হলে জানাযার নির্ধারিত দুআগুলো পাঠ করবে। আর সম্ভব না হলে দুআ-দুরুদ ইত্যাদি পাঠ করবে না। [শামী: ২/ ২১৬-২১৭; হাশিয়াতুত্তাহতাভী:৫৯৩; হিন্দিয়া: ১/১৬৪ মাহমুদিয়া:৮/৫৯৪]
জানাযার নামাযের ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নত
জানাযার নামাযের রুকন বা ফরয দুটি: ১. চারটি তাকবীর বলা ২. দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা। ওয়াজিব একটি : সালাম ফিরানো। আর সুন্নত তিনটি :
১.ছানা পড়া ২. দরূদ পড়া ৩. মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ করা। [শামী:২২০৯] জানাযার নামাযের কাতার মুস্তাহাব হলো, নামাযের জন্য তিন কাতার বা বেজোড়সংখ্যক কাতার করা। আর জানাযের নামাযে সর্বশেষ কাতারে দাড়ানো উত্তম। [রদ্দুল রদ্দুল মুহতার:১/৫৬৯-৫৭০;ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১৬৪; আল হালবীল কাবীর:
৫৮৮ মাহমুদিয়া ৮/৫৯৫-৫৯৭]
জানাযার নামাযের নিয়ত
জানাযার নামাযে মাইয়িত ছেলে হোক বা মেয়ে, বালেগ হোক বা নাবালেগ, ইমাম সাহেব অন্তরে শুধু এটাই কল্পনা করবে যে আমি এই মাইয়িতের জানাযার নামায পড়া”িছ। অনুরূপ মুক্তাদীও ইমামের পেছনে জানাযার নামাযের নিয়ত করবে। তবে মুখে উ”চারণ করে নিয়ত করা উত্তম। [শামী:১/৪১৫; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৬৫,১৬৪; মাহমুদিয়া ৮/৫৪৮] জানাযার নামাযের নিয়ম
জানাযার নামায হলো, প’থমে এক তাকবীর বলবে। অতঃপর ছানা পড়বে। অতঃপর দ্বিতীয় তাকবীর বলে দরুদ শরীফ পড়বে। অতঃপর তৃতীয় তাকবীর বলে দুআ পাঠ করবে। অতঃপর চতুর্থ তাকবীর বলে সালাম
ফিরাবে। [শামী:২/২১২-২১৩; হিদায়া:১/৯০]
জানাজার নামাজের দোয়া সমূহ pdf
জানাযার নামাযের দুআ
[বালেগ নারী-পুরুষ]
اٌٍََّ ُٙ َُّ اغْفِشْ ٌِذَ ِّ١بَٔ ب َٚ َِِ ّ١زِٕ َب َٚ شَبِ٘ ذِ َٔب َٚ غَبئجِِٕ َب َٚ صَغِ ْ١شِٔ َب َٚ وَ جِ ْ١شِٔ َب َٚ روََشِٔ َب َٚ اُ ْضبَٔ َب اٌٍََّ ُٙ َُّ َِ ْٓ
ادَْ َ١ ْ١زَُٗ َِِّٕب فَبدَْ ِ١ ِٗ عٍََٝ الِْْسْلََ َِ َٚ َِ ْٓ رَٛ َفَّ ْ١زَُٗ َِِّٕب فزََٛ َفَُّٗ عٍََٝ الِْْ ْ٠ َّب ِْ.
বাংলা উ”চারণ
আল্লা-হুম্মাগফির লিহায়্যিনা-ওয়ামায়্যিতিনা- ওয়াশা-হিদিনা-ওয়াগা-ইবিনাওয়াসাগীরিনা-ওয়াকাবীরিনা-ওয়াযাকারিনা-ওয়াউনসা-না, আল্লা-হুম্মা মান আহ্য়াইতাহু মিন্না-ফাআহইয়িহী ‘আলাল ইসলাম, ওয়ামান্ তাওয়াফফ্াইতাহু মিন্না- ফাতাওয়াফফ্াহু ‘আলাল ঈমান। বাংলা অনুবাদ
হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে জীবিত, মৃত, উপ¯ি’ত, অনুপ¯ি’ত, ছোট, বড়, পুরুষ, নারী সকলের গোনাহ দয়া করে মাফ করে দাও। হে আল্লাহ! আমাদের যাকে তুমি জীবিত রাখো, ইসলামের সাথে জীবিত রাখো এবং যাকে মৃত্যু দান
করো, ঈমানের সাথে মৃত্যু দান করো।
জানাজার নামাজের দোয়া সমূহ pdf link